Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

আষাঢ় মাসের কৃষি (১৪২৭)

(১৫ জুন-১৫ জুলাই)
কৃষিবিদ ফেরদৌসী বেগম

আষাঢ় মাসেই নববর্ষার শীতল স্পর্শে ধরণীকে শান্ত ও শুদ্ধ করতে বর্ষা ঋতু আগমন। খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর, ডোবা ভরে ওঠে নতুন পানির জোয়ারে। গাছপালা ধুয়ে মুছে সবুজ প্রকৃতি মন ভালো করে দেয় প্রতিটি বাঙালির। সাথে আমাদের কৃষিকাজে নিয়ে আসে ব্যাপক ব্যস্ততা। প্রিয় কৃষিজীবী ভাইবোন আসুন আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে জেনে নেই আষাঢ় মাসে কৃষির করণীয় আবশ্যকীয় কাজগুলো।
আউশ ধান
আউশ ধানের ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য যতœ নিতে হবে। সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রোগ ও পোকামাকড় দমন করতে হবে। বন্যার আশঙ্কা হলে আগাম রোপণ করা আউশ ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলেই কেটে মাড়াই-ঝাড়াই করে শুকিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
আমন ধান
আমন ধানের বীজতলা তৈরির সময় এখন। পানিতে ডুবে না এমন উঁচু খোলা জমিতে বীজতলা তৈরি করতে হবে। বন্যার কারণে রোপা আমনের বীজতলা করার মতো জায়গা না থাকলে ভাসমান বীজতলা বা দাপগ পদ্ধতিতে বীজতলা করে চারা উৎপাদন করা যায়।
বীজতলায় বীজ বপন করার আগে ভালো জাতের মানসম্পন্ন বীজ নির্বাচন করতে হবে। রোপা আমনের অনুক‚ল পরিবেশ উপযোগী উন্নত জাত, যেমন বিআর১০, ব্রি ধান৩০, ব্রি ধান৩২, ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৩৯, ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৭১, ব্রি ধান৭২, ব্রি ধান৭৫, ব্রি ধান৭৯, ব্রি ধান৮০, ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৯০, ব্রি হাইব্রিড ধান৪, ব্রি হাইব্রিড ধান৬, বিনা ধান৭, বিনা ধান১১, বিনা ধান১৬, বিনা ধান১৭, বিনা ধান২২, বিনা ধান২৩ প্রতিক‚ল পরিবেশ উপযোগী উন্নত জাত চাষ করতে পারেন;
খরাপ্রবণ এলাকাতে নাবি রোপার পরিবর্তে যথাসম্ভব আগাম রোপা আমনের (ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৯, ব্রি ধান৫৬, ব্রি ধান৫৭, ব্রি ধান৬৬, ব্রি ধান৭১ এসব) এবং লবণাক্ত ব্রি ধান৭৩ চাষ করতে হবে;
ভালো চারা পেতে প্রতি বর্গমিটার বীজতলার জন্য ২ কেজি গোবর, ১০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ১০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে।
আষাঢ় মাসে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ শুরু করা যায়;
মূল জমিতে শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি ৯০ কেজি টিএসপি, ৭০ কেজি এমওপি, ১১ কেজি দস্তা এবং ৬০ কেজি জিপসাম দিতে হবে;
জমির এক কোণে মিনি পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন যেন পরবর্তীতে সম্পূরক সেচ নিশ্চিত করা যায়।
ভুট্টা
পরিপক্ব হওয়ার পর বৃষ্টিতে নষ্ট হবার আগে মোচা সংগ্রহ করে  ঘরের বারান্দায় সংগ্রহ করতে পারেন। রোদ হলে শুকিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মোচা পাকতে দেরি হলে মোচার আগা চাপ দিয়ে নি¤œমুখী করে দিতে হবে, এতে বৃষ্টিতে মোচা নষ্ট হবে না।
পাট
পাট গাছের বয়স চারমাস হলে ক্ষেতের পাট গাছ কেটে নিতে হবে।
পাট গাছ কাটার পর চিকন ও মোটা পাট গাছ আলাদা করে আঁটি বেঁধে দুই/তিন দিন দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে।
পাতা ঝরে গেলে ৩/৪দিন পাট গাছগুলোর গোড়া একফুট পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর পরিষ্কার পানিতে জাগ দিতে হবে।
পাট পচে গেলে পানিতে আঁটি ভাসিয়ে আঁশ ছাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে পাটের আঁশের গুণাগুণ ভালো থাকবে। ছাড়ানো আঁশ পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে বাঁশের আড়ে শুকাতে হবে।
যেসব জায়গায় জাগ দেয়ার পানির অভাব সেখানে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচাতে পারেন। এতে আঁশের মান ভালো হয় এবং পচন সময় কমে যায়।    
পাটের বীজ উৎপাদনের জন্য ১০০ দিন বয়সের পাট গাছের এক থেকে দেড় ফুট ডগা কেটে নিয়ে দুটি গিটসহ ৩/৪ টুকরা করে ভেজা জমিতে দক্ষিণমুখী কাত করে রোপণ করতে হবে। রোপণ করা টুকরোগুলো থেকে ডালপালা বের হয়ে নতুন চারা হবে। পরবর্তীতে এসব চারায় প্রচুর ফল ধরবে এবং তা থেকে বীজ পাওয়া যাবে।
শাকসবজি
এ সময়ে উৎপাদিত শাকসবজির মধ্যে আছে ডাঁটা, গিমাকলমি, পুঁইশাক, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঝিঙা, শসা, ঢেঁড়স, বেগুন। এসব সবজির গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং প্রয়োজনে মাটি তুলে দিতে হবে। এছাড়া বন্যার পানি সহনশীল লতিরাজ কচুর আবাদ করতে পারেন; উপক‚লীয় অঞ্চলে ঘেরের পাড়ে গিমাকলমি ও অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারেন; সবজি ক্ষেতে পানি জমতে দেয়া যাবে না। পানি জমে গেলে সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে; তাড়াতাড়ি ফুল ও ফল ধরার জন্য বেশি বৃদ্ধি সমৃদ্ধ লতা জাতীয় গাছের ১৫-২০ শতাংশের লতা পাতা কেটে দিতে হবে। কুমড়া জাতীয় সব সবজিতে হাত পরাগায়ন বা কৃত্রিম পরাগায়ন করতে হবে। গাছে ফুল ধরা শুরু হলে প্রতিদিন ভোরবেলা হাতপরাগায়ন নিশ্চিত করলে ফলন অনেক বেড়ে যাবে।
আগাম জাতের শিম এবং লাউয়ের জন্য প্রায় ৩ ফুট দূরে দূরে ১ ফুট চওড়া ও ১ ফুট গভীর করে মাদা তৈরি করতে হবে। মাদা তৈরির সময় গর্তপ্রতি ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম সরিষার খৈল, ২ কেজি ছাই, ১০০ গ্রাম টিএসপি ভালোভাবে মাদার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর প্রতি গাদায় ৩/৪টি ভালো সবল বীজ রোপণ করতে হবে।
এছাড়াও আগাম শীতকালীন সবজি উৎপাদনে টানেল টেকনোলজি ব্যবহার করা যেতে পারে।
গাছপালা
এ সময়টা গাছের চারা রোপণের জন্য খুবই উপযুক্ত। বসতবাড়ির আশপাশে, খোলা জায়গায়, চাষাবাদের অনুপযোগী পতিত জমিতে, রাস্তাঘাটের পাশে, পুকুর পাড়ে, নদীর তীরে গাছের চারা বা কলম রোপণের উদ্যোগ নিতে হবে; এ সময় বনজ গাছের চারা ছাড়াও ফল ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করতে পারেন; ফলের চারা রোপণের আগে গর্ত তৈরি করতে হবে; সাধারণ হিসাব অনুযায়ী এক ফুট চওড়া ও এক ফুট গভীর গর্ত করে গর্তের মাটির সাথে ১০০ গ্রাম করে টিএসপি ও এমওপি সার মিশিয়ে, দিন দশের পরে চারা বা কলম লাগাতে হবে; বৃক্ষ রোপণের ক্ষেত্রে উন্নত জাতের রোগমুক্ত সুস্থ-সবল চারা বা কলম রোপণ করতে হবে; চারা শুধু রোপণ করলেই হবে না। এগুলোকে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। চারা রোপণের পর শক্ত খুঁটি দিয়ে চারা বেঁধে দিতে হবে। এরপর বেড়া বা খাঁচা দিয়ে চারা রক্ষা করা, গোড়ায় মাটি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, সেচনিকাশ নিশ্চিত করতে হবে; নার্সারি মালিক যারা তাদের মাতৃগাছ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি খুব জরুরি। সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, দুর্বল রোগাক্রান্ত ডালপালা কাটা বা ছেটে দেয়ার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ
বর্ষাকালে হাঁসমুরগির ঘর যাতে জীবাণুমুক্ত ও আলো-বাতাসপূর্ণ থাকে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে; এ মাসে হাঁস-মুরগির কৃমি, কলেরা, রক্ত আমাশায়, পুলরাম রোগ, সংক্রমণ সর্দি দেখা দিতে পারে।           চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রæত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে; বর্ষাকালে গবাদিপশুকে সংরক্ষণ করা খড়, শুকনো ঘাস, ভুসি, কুঁড়া খেতে দিতে হবে। সে সাথে কাঁচা ঘাস খাওয়াতে হবে। মাঠ থেকে সংগৃহীত সবুজ ঘাস ভালোভাবে পরিষ্কার না করে খাওয়ানো যাবে না; বর্ষাকালে গবাদিপশুর গলাফোলা, তড়কা, বাদলা, ক্ষুরা রোগ মহামারী আকারে দেখা দিতে পারে। এ জন্য প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে; এ সময় ডাইরিয়া এবং নিউমোনিয়া রোগে গবাদিপশুকে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তাই গবাদিপশুকে ঠাÐামুক্ত ও শুষ্ক জায়গায় রাখতে হবে। হাল চাষের পর গরুকে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে; এছাড়াও যেকোনো পরামর্শের জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
মৎস্য সম্পদ
বর্ষা মৌসুমে পুকুরের পাড় উঁচু করে দিতে হবে; বন্যার সময় পুকুরে মাছ আটকানোর জন্য জাল, বাঁশের চাটাই দিয়ে ঘেরা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে; আষাঢ় মাস মাছের পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময়। মাছ চাষের জন্য মিশ্র পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন; পুকুরে নিয়মিত খাবার দিতে হবে এবং জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে; বড় পুকুরে, হাওরে, বিলে, নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ করতে পারেন;  মাছ চাষের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
সুপ্রিয় কৃষিজীবী ভাইবোন, আপনাদের আগাম প্রস্তুতির জন্য আগামী মাসে উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর বিষয়ে সংক্ষিপ্তভাবে জানিয়ে দেয়া হয়। বিস্তারিত জানার জন্য স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি-মৎস্য-প্রাণী বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। আর একটি কথা এ সময় বীজ ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় কৃষি উপকরণগুলো বন্যামুক্ত উঁচু বা নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।  য়

সম্পাদক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা, টেলিফোন : ০২৫৫০২৮৪০৪; ই-মেইল : fardousi30@gmail.com

 

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon